প্রথম পর্ব: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার

এখন পর্যন্ত এবারের বিপি এলে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার। 

সাকিব বিহীন এবারের বিপি এল দর্শকদের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলতে পারিনি। তার মধ্যে আবার সম্প্রতি ভারত সফরে ভয়ানক বিপর্যয়, সবকিছু মিলে এক রস কস হীন বিপি এল যা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে দুসপ্তাহ আগে। ২/১ টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এখনো এবারের বি পি এল মাঠে তেমন উত্তাপ সরাতে পারেনি। দেশি ব্যাডসম্যান দের মধ্যে কিছুটা ধারাবাহিক সফলতায় ইমরুল, মুশফিকের,লিটন, মিঠুন ও আজ জলে উঠলেন তামিম সিলেটের বিপক্ষে। আজ তামিমের ৬০ রানের উপর ভর করে মাত্র দুই উইকেটের বিনিময়ে ১৭৫ রান করে সিলেটের ১৭৪ রান অনায়েসে টপকে যায় আরেক শক্তিশালী দোল ঢাকা প্লাটুন।

চলুন শুরু থেকে দেখা যাক এবারের বিপি এল নিয়ে আরো কিছু খবর সেই সাথে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জারের শীর্ষে উঠার রহস্য।

শুরু থেকেই অনেক জল্পন- কল্পনা ছিল এবারের বিপি এল নিয়ে । কারণ , ফ্র্যাংকইচিজ বিহীন এবারের বিপি এল এর সার্বিক ভার স্বয়ং বি সি সি বি নিজের কাঁধে নিয়েছে। এবারের বি পি এল কে বঙ্গ বন্ধুর ১০০তম জন্মবার্ষিকী উপললক্ষে নামকরণ করা হয়েছে “বঙ্গ বন্ধু বিপি এল”। তাই , সরকারিভাবে জোরেশোরে চেষ্টা করা হয় কিভাবে এই টুর্নামেন্ট একটু রং/চং মেখে আরোও আকর্ষণীয় করা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় নয় তারিখের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে উড়ে নিয়ে আসা হয় বলিউড সুপার ষ্টার সালমান খান ও তার প্রাক্তন গার্ল ফ্রেন্ড ক্যাটরিনা কাইফকে। উদ্ভোধনী অনুঠানে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এই অভিনেতা/ অভিনেত্রীর ছবি গণ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ডিসেম্বরের ১১ তারিখে ঢাকায় অনুঠিত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার ভার্সেস সিলেট থান্ডার টিমের খেলার মধ্যে দিয়ে মাঠে গড়ায় এবারের বঙ্গবন্ধু বিপি এল ।

মোট ৭ টি দোল নিয়ে শুরু হয় এবারে বঙ্গ বন্ধু বিপি এল । নতুন করে নাম পরিবর্তন আনা হয় কিছু দলের । ঢাকা প্লাটুন, টগ্রাম চ্যালেঞ্জার, খুলনা টাইগার্স, সিলেট সথান্ডার, কুমিল্লা ওরিওর্স, রাজশাহী রয়্যালস ও রংপুর রেঞ্জার্স। মোট ৫ টি ফেজে তিনটি জেলায় সব খেলাগুলি অনুঠিত হবে। প্রথম ফেজের খেলা যা ইতোমধ্যে হয়ে গেছে ডিসেম্বরের ১১ তারিখ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত; দ্বিতীয় ফেজের খেলা শুরু হয়েছে ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ থেকে চট্টগামে যা চলবে ডিসেম্বরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত; তৃতীয় ফেজের খেলা শুরু হবে ডিম্বারের ২৭ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত ডাকে, চতুর্থ ফেজের খেলা শুরু হবে জানুয়ারী -র ২ তারিখ থেকে সিলেট শহরে যা চলবে জানুয়ারির ৪ তারিখ পর্যন্ত এবং ফাইনাল ফেজের খেলা শুরু হবে ডাকা শহরে জানুয়ারির ৭ তারিখ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত।

এখন পর্যন্ত পয়েন্ট তালিকায় ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার, যদিও তাঁরা খেলে ফেলেছেন ৭ টি ম্যাচ। এদিকে, গতকাল পর্যন্ত সমান সংখ্যক ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চথুর্ত অবস্থানে ছিল যথাক্রমে রাজশাহী রয়্যালস, খুলনা টাইগার্স ও ঢাকা প্লাটুন যদিও এক ম্যাচ কম খেলেছে রাজশাহী রয়্যালস। এক রাতের মধ্যে আজ ঢাকা ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থান দখলকরে নিশ্বাস ফেলছে চট্টগ্রামের ঘাড়ের কাছে। এই লেখা যেকোন লিখছি, রাজশাহীর খেলা চলছে কুমিল্লার সাথে. আজ যদি রাজশাহী জিতে যায় , তবে পয়েন্ট তালিকায় ৮ পয়েন টি নিয়ে রাজশাহী দ্বিতীয় স্টেষনের জন্য ডাকার সাথে ভাগাভাগি করে নিবি যদিও তাঁরা ডাকার তুলনায় এক ম্যাচ কম খেলেছে।

চলুন এবার শীর্ষে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার টিমের পারফরমেন্স নিয়ে একটু দৃষ্টি ফেরানো যাক। মাহমুদুল্লাহ-র চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার টিমে দেশিদের মধ্যে আছেন মাহমুদুল্লাহ সহ ইমরুল কায়েস, নুরুল হাসান, নাসির হোসেন। এঁদের মধ্যে ইমরুল কায়েস ভীষণ ধারাবাহিক। এবারের প্রথম খেলায় ডিসেম্বর ১১ তারিখে মাহমুদুল্লাহ বিহীন টিম নিয়ে তার ৬১ রান সিলেটের বিপক্ষে জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এক দিন পরেই, ডিসেম্বর ১৪ তারিকে অনুষ্ঠিত রংপুরের বিপক্ষে খেলায় ইমরুল কায়েসের অপরাজিত ৪৪ রান চট্টগ্রামের জয়ের বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ডিসেম্বর ১৭ তারিখে পরের ম্যাচে সিলেটের বিরুদ্ধে মাহমুদুল্লাহ ফিরলেও সে ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ ও ইমরুল কায়েস তেমন রান করতে না পারলেও ক্যারাবিয়ান খেলোয়াড় সিমন্সের ৪৪ রানের উপর ভর করে সেবার স্পল্প পুঁজির খেলায় চট্টগ্রাম জয়ী হয়। এক দিন পরেই অর্থাৎ ডিসেম্বর ১৮ তারিখে কাজ্যে কলমে শক্তিশালী ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে বড় পুঁজির খেলায় আবারো জলে উঠেন ইমরুল কায়েস। এবার ইমরুল কায়েসের ৪০ রানের পাশা পাশি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ-র ৫৯ রান চট্টগ্রামকে ২২১ রানের পুঁজি এনে দেয় এবং ২০৫ রান তুলে ঢাকা অল আউট হয়ে যায়। এক দিন পরেই, ডিসেম্বর ২০ তারিখে ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে আবারো জ্বলে উঠেন ইমরুল কায়েস। এই ম্যাচে ইমরুল কায়েসের ৬২ রানের উপর ভর করে ২৩৮ রান করে চট্টগ্রাম। সাত উইকেটের বিনিময়ে ২০ ওভারে ২২২ রানে থেমে যেতে হয় কুমিল্লাকে। এ পর্যন্ত একমাত্র খেলা যা চট্টগ্রাম পরাজিত হয় সেটা অনুষ্ঠিত হয় ডিসেম্বর ২০ তারিখে রংপুরের বিপক্ষে। মাহমুদুল্লাহ সেই খেলায় জ্বলে উঠতে পারেনি ইমরুল কায়েস। জ্বলে উঠেনি বিদেশি কোনো খেলোয়াড়. ফলশ্রুতিতে পরাজিত হয় চট্টগ্রাম.চট্টগ্রাম টিমে জাতীয় দলের ফাস্ট বলার রুবেলের পাশা পাশি এবারের বি পি এলে গতি দিয়ে চমক দেখান আরেক বাম হাতি ফাস্ট বলার মেহেদী হাসান রানা। কে জানে এই মেহেদী হাসান রানাই হতে পারে এবারের বিপি এলের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার টিমের তুরুপের তাস।

টি- ২০ ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় ক্রিস গেইল এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার টিমের সাথে যোগ দিতে পারেননি । আশা করা হচ্ছে পরের পর্ব থেকে তিনি দলের সাথে যোগ দিতে পারবেন. সে ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার হতে পারে এবারের বিপিএলে একটি পরাক্রমশীল দল ।

ক্রিকেট মিশে আছে আমাদের মজ্জার মধ্যে। দেশের টাইগাররা যতই খারাপ খেলুক না কেন এরাই তো আমাদের ঘড়ের সন্তানের মতো । আর হতাশ নয়। চলুন, চলমান বিপি এলে চোখ রেখে উৎসাহিত করি আমাদের ঘড়ের ছেলেদের। চোখ রাখি আমাদের জনপ্রিয় পরবাসী ব্লগে খেলার পাতায় (চলবে) 

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবার চেয়ারম্যান ক্লাব এওয়ার্ড পেলেন আমিনুল ইসলাম
পরবর্তী নিবন্ধ“Regent Park spreads the joy of Christmas”
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন
জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন (জন্ম: ১৯৬৬ ), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে দেশীয় ও আন্তজার্তিক অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরী শুরু করেন এবং তখন থেকেই লেখালেখিতে মনোনিবেশ। তবে লেখালেখি শুরুটা ছিল সেই হাইস্কুল জীবনে পাড়ার বড় ভাইদের প্রকাশিত ম্যাগাজিন 'অবসর' নামক পত্রিকার মাধ্যমে। ২০০৩ সালে কানাডায় সপরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে, আবারও পড়াশুনা, প্রথম Humber College থেকে সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে দুই বছরের ডিপ্লোমা, পরে University of Guelph থেকে ফ্যামিলি & কমিউনিটি সোশ্যাল সার্ভিস বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে আবারও উন্নয়ন কর্মী হিসাবে রেজিস্টার্ড সোশ্যাল সার্ভিস ওয়ার্কার হিসাবে ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি টরেন্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর করছেন । লেখকের কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক গল্পপ্রবাসী ব্লগ, কানাডা ভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক বাংলামেইল পত্রিকায় এবং মাসমিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পরে ঢাকায় ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় লেখকের তিনটি বই হোমলেস, সিঙ্গেল মাদার, জোসনা ম্যানশন উপন্যাস আকারে প্রকাশিত হয় । বর্তমানে হাউজ হাজব্যান্ড নামে লেখকের আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কে উপন্যাস হিসাবে ২০২৪ সালের ঢাকা একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখকের একটি জনপ্রিয় গল্প 'শেকড়' ২০২১ সালে বাংলাদেশের বুকল্যান্ড প্রকাশনা থেকে ৫০ লেখকের ভাবনা নিয়ে পঞ্চাশে বাংলাদেশ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল। গল্প/উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও খেলাধুলা নিয়েও লেখকের অনেক লেখা রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন