Psychopath word cloud

– ছাদ টাতে কি রেলিঙ ছিলো???

হ্যা ছিলো বুঝি।  এক পড়ন্ত বিকালের ছাদ। চারপাশের পরিবেশটা ছিলো আজকাল কার দিনে স্বপ্নের মত।কেনো বললাম?  কারন ও বাড়িটা যতদূর জানি যাদের তারা কেউ কোন সদস্য ই থাকেন না।  হয়ত বিক্রি করেছেন।  বলছি কারন আমি সঠিক জানি না।  আসলেই কিছু জানি না।  প্রিয় জিনিস,  প্রিয় মানুষ,  প্রিয় সঙ্গী,  প্রিয় খেলনা, প্রিয় খেলার সাথী,  প্রিয় প্রিয় অনেক কিছুই আজ ঝাপসা।

আচ্ছা স্মৃতি তে কিছু মনে পড়ে আবার হারিয়ে যায়…
এটা কি শখের রোগ ?   লক্ষ্মণ …
সাইকোদের কি এমনই হয়।  ব্যাপার না।  মোটেও ব্যাপার না।
সাইকো রা মানুষ কামড়ায় জানি না তবে কামড়ালেও রক্ষা নেই   —- জানো তো ?
এই এই শুনছো রক্তে মাংসে গড়া পিশাচের পৈশাচিক বিকৃতি কুশাগ্রে প্রবহমান জাতি ?
–  তোমাদেরকে বলছি …
মানুষ।  যতক্ষণ রক্ত পিচকিরি দিয়ে না বের হয় ততক্ষণ দাঁত কামড়ে  –
–  উফ্ কি সাংঘাতিক ধারণা,
আমারও কি মিসির আলির কাছে যেতে হবে ???
– বাসাটি একটা গলির ভিতর ,  হ্যা গলির ভিতরেই। প্রথম একটা গলি, পরে ডানে না বায়ের গলি মনে আসছে না যে।
– উফ্ কি চিনচিনে অসহ্য ব্যাথা —-
বাসাটা আমার ভীষণ পছন্দের।  শান্তিধামের মোড় দিয়ে যেতেই  মায়ের বোনের বাসা, অর্থাৎ আমার খালার বাসায় হয়।  প্রায় অবুজ বয়সের যাতায়াত।  আবার অনেকের ঐ বয়সের অনেক কিছু মনে থাকে। আমার থাকে না।  কিছু আছে স্মৃতি স্মারক হয়ে অস্পৃশ্য ভাবনায়। আমার কল্পনায় বাসাটা আজও জীবিত।  খালার চেহারাও তেমন মনে নাই।  তবে কারো সাথে যখন যেতাম রান্নাঘর থেকে ভদ্র মহিলার দরাজ কন্ঠ আজও আমায় এক স্নেহময় কর্ণে নিবিষ্ট।

মেইন গেইটা এখনকার মেইন গেটের মত বিশাল ছিলো না।  ঢুকতেই পাশে ছিলো দারুন টকটকে লাল এর জবা ফুল গাছ।  হ্যা মনে তো হয় জবা ফুলই ছিলো। রঙ্গন ফুল গাছ।  কি সুন্দর লেবু গাছ।  আরো কি ছিলো মনে নাই।  তবে যখনই যেতাম খালুকে তত্ত্বাবধানে থাকতে দেখতাম। বাসাটা  স্বপ্নের মত।  ঐ বাড়ির অনেক মানুষ।  আগের মানুষ তো। ভাইবোনের টিম আর কি…  ফুটবল  বা  ক্রিকেট বলেও চালিয়ে দেয়া যায়।  ঐ বাসার সবাই আমাকে আদর করতো ভীষণ।  তবে একজনকে আমার খুব ভালো লাগতো। আপু দেখতে এতো সুন্দর ছিলো,  এতো সুন্দর আজও কি ওমনি আছো সুন্দর তুমি …  তখনকার সময় বিপাশা, শমী, আফসানা মিমি  তারা তাদের মত।  কিন্তু তিনি  ছিল অন্য রকম সুন্দর আমার চোখে!

– বসুপাড়ায় ঠাঁই  নামে একটা বাড়ি ছিলো। যেতাম।  খুব যেতাম।  আহামরি ছিলোও না   আবার খুব চোখে লাগার মত ও না । ঐ যে ভালোলাগার কিছু অনুভূতি থাকে। অদ্ভুত একটা ঘর। বৃষ্টি র টাপুরটুপুর শব্দ।  বাইরে কিছু লতানো পাতা বাহার।

– গ্রামে গিয়েছিলাম সম্পর্কে সবার বড় ভাই এর বিয়েতে। আমি ভীষণ ছোট।  কিন্তু ঐ যে স্মৃতি র কিছু অস্পষ্ট মেঘনাদ কাব্যের উঁকিঝুঁকি।  মাঝে বিশাল উঠান।  কলপাড়ের পিছে প্রকান্ড বড়ই গাছ।  হালকা শীতের আমেজ।  বড়ই পাড়ছে।  বোনেরা বড়ই ভর্তা করলো। আমিও তাদের দলে ভিড়লাম।  বোনগুলার মাঝে অনেককেই হারিয়েছি আমরা পৃথিবীর নিয়ম ভান্ডারে।

– রূপসা যেতে একটা খুবই সাধারণ বাড়ি।  অথচ ও বাড়িটায় ঘিরে আছে ও বাড়ির মানুষগুলোর সাথে আমারও কিছু ছিটেফোঁটা স্মৃতি।  ছাদটা দারুন।  এক কোনে একটা ডালিম গাছ।  মেহেদী গাছ।  ছাদটা ছিলো অসাধারণ। রং টা জেনো কেমন হলুদ…

– আরেকটা  ভাড়া বাসা ছিলো সেটা।  তবে বাসাটা ভালো লাগতো। মনে পড়ে বাসার ভিতরটা ছোট্ট এক খোলা উঠানের মতন।  এক কোনে উচ্চের গাছ।  বৃষ্টি হলে আমি আর আমার সাথে ছোট দুটি ভাইবোন আনন্দে মেতে উঠতাম।  খুব সম্ভবত নামটি চয়ন।  দারুন নাম …

এই নামে যতদূর মনে পড়ে। তারপর, তারপর ফাঁকা জায়গা কিছু সমস্যা র জন্যে বাসাটা তারা পাল্টিয়ে ফেললো।

– ঢাকার বাড়ি বা বাসা কেমন জেনো …  দিনের মাঝেও রড লাইট জ্বালানো।
–  ভূতের কিম আকার বা কিম আকারের ভূত   =
কিম্ভূতকিমাকার   ।
জানালা খুললে পাশের বাড়ির ভাইয়ের সাথে চোখাচোখি,

সন্ধ্যে বেলায় টিভি খুলে হয়ত কিছু দেখবো দেখার উপায় নাই পাশের ফ্লাটের ভাবি মেয়েকে পড়ানো নিয়ে যুদ্ধ করতে করতে কখন যে ভাই এর সাথেও যুদ্ধ এ লেগে গেলো। পিছন ব্যালকোনি না খুললে দম আটকানো। মশার প্রকোপ উৎপাত।  ছাদে গিয়ে দেখা যায়     ( মেজ রানার )  ২০১৪ এর মুভি,  এই মুভির মত ছক বেঁধে দেওয়া বিশাল দানব বিল্ডিং ।  এই বুঝি সব চেপে ধরলো। সেই ভয়ংকর দৈত্যের আগমন ঘটলো।

– স্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন।  মিসির আলি সাহেবের সাথে অতি সত্তর যোগাযোগ করাটা হয়ত জরুরী। রানু নাকি নীলু কে আসছে…  আমি তো কেউ নই…  কেউ ছিলাম না…  কেউ হিসাবে কারো থাকবো না ….  কেউ নই

আজ অস্পৃশ্য  অস্পষ্ট স্বপ্ন গুলো আমায় ক্ষনে ক্ষনে হানা দিয়েছে।
–  উফ্ মাথা ডান পাশটা কি চিনচিনে ব্যাথা গো …

লাশটার সাথে ধস্তাধস্তির সময়ে কি দিয়ে যে মাথায় বারিটা দিলো উফ্ উফ্ উফ্
– ছাড়বো না,   – আমি ছাড়বো না….  আমার যে রক্ত চক্ষুর রক্ত    পিপাসায় মাতালের প্রলয় নিমিত্তে মগ্ন মন।
– আমিও যে আবারও উফ্ ঐ যে সেই গলা কাটা থেকে কিনকিনিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।  হ্যা হচ্ছে তো।  চোখটা আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে আছে না ?
– হ্যা তাই তো,  তাই তো এমনই তো মনে হচ্ছে।
– ও কি প্রতিশোধ নিবে আরো,  আমিও ছাড়বো না।  ঘ্যাচ ঘ্যাচ করে পেট ফুটো করবো। বলে দিলাম …
–  নাহ অচেতন হয়ে যাচ্ছি কি আমি?

– উঠে চুপ করে বসে আছি। পাশে জেনো কে তাকে ডিঙিয়ে যেতে হবে, কিন্তু কে?
চিনতে পারছি না তো …
এদিকে গলাটা পুরা কাঠ শুকনো। মনে হচ্ছে আবার চলে যাচ্ছি সেই স্মৃতি ভ্রষ্টের  দরজার কোণে….
একটা চিকন আলো কাছে এগিয়ে আসছে।  লেজার রশ্মি বলে না এটাকে ?
– বেহুঁশ হবার আগে মানুষের কেমন অনুভূতি থাকে…  আজও কি খুন করবো সেই জন্তু টাকে  ….

–  আমি যেখানে যেমন তেমন।  ওটা ছিলো আমার অখণ্ড মস্তিষ্কের খন্ড খন্ড বিন্যাশ আচরণ   ***

নীলিকা নীলাচল***

®

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন