india-toilet-1

ইউনেসেফ আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ি খোলা জায়গায় মলত্যাগের  অভ্যাস সবচাইতে বেশী ভারতে । দেশটির ৬০  কোটিরও  বেশী মানুষ উন্মুক্ত জায়গায় মলত্যাগ  করে। খোলা হাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো জানতাম তবে খোলা হাওয়া  মলত্যাগের জন্য কতটুকু সাহায়ক তা আমার জানা নাই।  হয়তো কোথায় কোনো সুখানুভূতি আছে , তা না হলে  কেন এত বিশাল সংখ্যক ভারতীয় আনন্দের সাথে খোলা হাওয়ায় এই কাজ উপভোগ করবেন ।

কিন্তু ভারতকে স্বচ্ছ ও পরিস্কার করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শুরু করেছেন ” স্বচ্ছ ভারত অভিযান “। এরই অংশ হিসাবে যত্রতত্র “জলত্যাগ (প্রস্রাব) আর মলত্যাগ ” এর  উপর  নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই বাপরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নানা রকম বিজ্ঞাপন ও  দেওয়া  হচ্ছে। সৃষ্টি কারা হচ্ছে  জন সচেতনতা। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যেও নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন রকম বাতিক্রম ধর্মী ব্যবস্থা। এই রকম একটি রাজ্যের একটি বিরম্বনাময় কাহিনী আজকের বিষয় ।

এটা হায়দ্রাবাদের   কাহিনী। যত্রতত্র প্রস্রাব করা ঠেকাতে  অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এই উদ্দ্যেস্যকে ” পুলিশের গান্ধীগিরি” হিসাবে আখ্যায়িত  করা হয়েছে। অভিনব এই উদ্যোগ হলো কাউকে  ফুটপাথে বা কোনো উন্মুক্ত স্থানে  “জলত্যাগ (প্রস্রাব) ব়া মলত্যাগ ”  করতে দেখলে পুলিশ তাকে ফুলের মালা পরিয়ে দেবে। যাকে বলা  হয় “লজ্জার মালা ” । সেই মালা পরানোর পরে পুলিশ ওই ব্যাক্তিকে এর পর থেকে পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের পরামর্শ দেবে।

এই রকম একটি ঘটনা একদিন ঘটিয়ে  দিল একটা বিড়ম্বনাকর কাহিনী। খোলা জায়গায় প্রস্রাব করার অপরাধে লজ্জার মালা পরানো এক বাক্তি যখন রাস্তা দিয়ে হেটে যাছিল তখন কিছু উত্সাহী জনতা হাতে তালি দিতে দিতে তার পিছন পিছন যাচ্ছিলো। তারা কেউ কেউ আবার বাদ্য যন্ত্র বাজাচ্ছিলো। লোকটি লজ্জায় বড় রাস্তা ছেড়ে একটা বস্তির গলির মধ্যে দিয়ে চলতে লাগলো। তখনো সে  মালা পরা অবস্থাত ছিল। ঐ লোকগুলো তখনো তার পিছন পিছন  যাচ্ছিলো। ঘটনাক্রমে সে  বস্তির একটা বিয়ে বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো সেই  বাড়ির কন্যা পক্ষ বরের জন্য অনেকক্ষন অপেক্ষা করছিল। তারা ঐ মালাপরা লোকটিকে বর মনেকরে ভিতরে নিয়ে বিয়ের  পিড়েতে  বসিয়ে দিলো । সাথে সাথে অপেক্ষারত পন্ডিত মন্ত্র পড়তে শুরু করলো।  লোকটা লজ্জায় তার মালা পরার কাহিনী  বলতে পারছিল না। শুরু হলো সাতপাকে ঘোরা। সাতপাক শেষ হবে  হবে ঠিক সেই মুহুর্তে আসল  বরের আগমন হলো। আবার কন্যা পক্ষ বুঝতে পারলো যাকে তারা বর মনে করেছেলো আসলে সে “প্রকাশ্যে জলত্যাগের ” অপরাধে “লজ্জার মালা ” পরানো অপরাধী ।  তারা নিজের  ভূলটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে, সত্য  গোপনের অভিযোগে  লোকটিকে উত্তম মধ্যম দিতে লাগলো । যার ফলশ্রুতিতে লোকটা এইবার তার ধুতিতেই “জলত্যাগ ” করে দিলো।

তবে এবারের জলত্যাগের সময় ” লজ্জার মালার” পরিবর্তে ঢোল আর শাখের বাজনা বাজছিল।  একেই বলে আনন্দঘন পরিবশে “জলত্যাগ” করা।

2 মন্তব্য

  1. ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে প্রকাশ্যে মলতেগের হার ইর্ষনীয় ভাবেই কম.BRAC এর পরিসংখ্যান অনুসারে ২০০৩ সালে যা ছিল শতকরা ৪২ ভাগ, ২০১৪ সালে তা নেমে এসেছে শতকরা তিন ভাগে. কিন্তু জলতেগের সাথে ফুলের মাল্য দানের বিষয়টি নিঃসন্দেহে বিবেচনার দাবি রাখে. অন্তত আমাদের সুশীল সমাজ সুশাসন প্রতিষ্টার অংশ হিসেবে বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন. ধন্যবাদ সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য.

  2. উপরোক্ত পদ্ধতিতে জলত্যাগ বা মলত্যাগ কোনটিই স্বাস্থ্যকর বা সব্ভো নয় সেটা যে দেশেই বা কম বেশি যেখানে জাই হোক। আমরা যতই ডিজিটাল বা ন্যনো টাটার দেশ হই না কেন আমাদের সমাজে এই অবস্থা তাখলে তাকে উন্নত বলা কঠিন হবে। পরিস্থিতির উন্নয়ন হচ্হে কিন্তু গতি কস্চপতুল্য আর এজন্য সমাজের সবাইকে ক্ষুদ্র পরিসর থেকে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
    এ প্রসঙ্গে অনেক দিন আগের একটি সত্য গল্প পড়লো। আমার বাবা তখন বাংলাদেশের দর্শনা থানার ওছি, তার স্থানীয় বন্ধু চেয়ারম্যান একদিন মোটর ছাইকেলে আব্বার সঙ্গে দেখা করতে আসছিলেন, এমন সময় দুরে রাস্তার পাশে এক বেক্তিকে দেখেন যে উনি ওই অবস্থায় মুক্ত পরিবেশে কার্য সম্পাদন করছেন এবং শ্রীকান্ত গল্পের “নতুনদার ঠুন ঠুন ক পেআলা” গানের মত সুরে গান গাস্চিলেন। চেয়ারম্যান চাচা মটরসাইকেল থামিয়ে একঠি মাটির ঢিলা নিয়ে ছুড়ে মারলেন ঠিক তার নিস্কাশন পয়েন্টএ, এবার বুজতে পারছেন নীয়গত হওয়ার আগেই চতুর্পাশে চড়িয়ে গেলো এবং অতি শন্তিতে প্রাকিতিক কার্য সম্পাদনকারী বেক্তিটি দ্রুত উঠে দৌড় মারলেন। এখন ঘটনাটি মনে পড়লে মনে করি যে চেয়ারম্যান চাচা একজন যোগ্য জন প্রিতিনিধির দায়ত্ব পালন করলেও পদ্ধতিটি একটু কঠোরই ছিলো, তবে কি জানি আমদের সমাজে যে পরিমান দায়ত্তহীন লোক আছে তাতে হয়তো অবশেষে চেয়ারম্যান চাচার পদ্ধতিই অবলম্বন করতে হবে।
    যাহোক ধন্যবাদ দাদা, হাস্যকর হলেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশয়কে তুলে ধরার জন্য।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন