ফেসবুক লাইভ ইদানিং কালের একটা জনপ্রিয় বিষয়। কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান , বিয়ে বা জন্মদিনের অনুষ্টানের সরাসরি সমপ্রচার। আইডিয়াটা মন্দ নয়। আনন্দ ঘন মুহূর্তটি প্রিয় জনের সাথে শেয়ার করা, ব্যাপারটা খুব আনন্দের এই বিষয়ে সান্দেহের কোনো অবকাশ নাই । ফেসবুকের সুবাদে আমরা এই সুযোগটা পেয়েছি।

কিন্তু এই লাইভ নিয়ে আজকাল বিড়ম্বনাও অনেক। এই প্রযুক্তিতে ব্যবহার করে অনেকেই নিজের ঢোল বাজাতে ব্যাস্ত। ওনার অবস্থান , পেশা আর কর্মকান্ডকে আমি শ্রদ্ধাকরি। কিন্তু মনে রাখতে হবে আপনার এই আত্মপ্রচার যেন কারো বিরক্তির কারন না হয়। এক সেফুদার থেকে আজ অনেক সেফুদার সৃস্টি হয়েছে। কখনো বিশাল বপুটা ভাসিয়ে খালি গায় বসে গেলেন ক্যামেরার সামনে অথবা উস্ক-খুস্কো অবিন্যস্ত চুল ঠিক করতে করতে “জাতির” উদ্দেশ্যে জ্ঞানদান। আপনার জ্ঞান আর মেধার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই বলছি মনে রাখতে হবে আপনার মতামতের প্রতি আমি একমত নাও হতে পারি , তার মানে এই নয় যে আমরা বাক-যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে মল্লযুদ্ধের মতো একজন আরেকজনের মান সম্মানকে রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত করবো । বিশেষ করে গ্রুপ এডমিনদের একটা প্রবণতা – “আমি মোড়ল , তাই কথা আমিই বলবো। আপনারা শুধু শোনার জন্য। ” ওনারা তখন ভুলে যান যে ওই সকল সাদস্যদের কারনেই ওনার এই অবস্থান।

সময় নাই অসময় নাই হঠাৎ করাই আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারের মধ্যে পপ-আপ বাক্স খুলে যাবে , আর শুরু হবে জ্ঞানদানের পর্ব । হয়তো বিষয়টির প্রতি আপনার কোনো আগ্রহ নাই বা আপনার সাথে কোনো সমপৃিক্ততা নাই।

মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে গেছে , কিছুতেই ঘুম আসছে না। কি করা যায় , কি করা যায় -চলো যাই ফেসবুক লাইভে। কদিন আগে এই রকম একটা ঘটনা মোড় নিলো একটা বড় একটা বিড়ম্বনায়। হঠাৎ করেই “এক ব্যাক্তি ” লাইভে আসলেন। উনি জানালেন সময়ের অভাবে আজকাল লাইভ এ আসতে পারেন না। এই মুহূর্তে উনি কাজের ব্রেক টাইমটার সুযোগ নিয়ে কিছু বলতে চান। মনে হচ্ছিলো উনি একটু নিচু স্বরেই কথা বলছেন আর যে জায়গাটাতে উনি বসে আছেন সেটি একটু স্বল্প পরিসরের। ওনার বসার স্থানের পিছনে চেয়ারের পছন্দের অংশের পরিবর্তে সাদা রঙের সিরামিকের চৌকোনা বাক্স জাতীয় কিছু। আর মাঝে মাঝে ওয়াটার ফ্লাশের শব্দ। একটু সময় নিলেও বুঝতে কষ্ট হলোনা , উনি কোথায় বসে আছেন। কিন্তু তখনো আরো কিছু দেখতে বাকি ছিলো। হঠাৎ করে কোনো কারনে ক্যামেরাটা (সেল ফোন ) ছিটকে পাড়লো ওনার হাত থেকে – তারপর ? পরিবর্তন হয়ে গেলো দৃশ্যপটের – পায়ের কাছে পাতলুনটা গুটিতে আছে , হাটু দুটি দৃশ্যমান আর সব শেষে মুখের নিচের অংশ আর মাথার উপর জ্বল জ্বল করছে বৈদুতিক বাতি – বা কি সুন্দর একটা দৃশ্য। কিংকর্তব্য বিমূঢ় বক্তা , সেল ফোনটা ওনার নাগালের বাইরে। ছিটটা ছেড়ে ওঠা আরো বিপদ জনক – দৃশ্যমান হয়ে যাবে শরীরের নিম্নাংশ। এখন উপায়। .. !!! সম্বিত ফিরে পেয়ে গায়ের জামাটি খুলতে লাগলেন তিনি , তারপর হঠাৎ সব অন্ধকার। জামাটি ছুড়ে মেরেছেন ক্যামেরার উপর। তার পরের অংশ অজানা কাহিনী। …

(ছবি:-সৌজন্য Facebook)

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন