মোঃ মনিরুজমান

কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকার একটি সংবাদ আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ সংবাদটি পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্নের উদয় হয়েছে। সেগুলি সকলের সাথে শেয়ার করতে চাই। সর্বপ্রথমে সংবাদটি হুবহু উল্লেখ করছি :-

 

“স্বাস্থ্যসম্মত পানীয় হিসেবে বোতলজাত গোমূত্র বিক্রি করবে উত্তর প্রদেশ সরকার

আমাদের সময়.কম

প্রকাশের সময় : 25/03/2018

 

 

 

আসিফুজ্জামান পৃথিল: স্বাস্থ্যসম্মত পানীয় হিসেবে প্যাকেটজাত গোমূত্র বিক্রি করবে ভারতের উত্তর প্রদেশ সরকার! উত্তর প্রদেশের সরকারি আয়ুর্বেদিক ফার্মেসি গোমূত্র সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাত এবং বোতলআত করন বাজারজাতের একটি প্রস্তাব দিয়েছে।
এই সংস্থাটি পশ্চিম উত্তর প্রদেশের ১৬টি জেলার বিভিন্ন সরকারী কেন্দ্রে আয়ূর্বেদিক সামগ্রী সরবারহ করে থাকে। সরকারী আয়ুর্বেদিক কলেজে পিলবিটের অধ্যক্ষ্য . প্রকাশ চন্দ্র সাক্সেনা বলেছেন, ‘শুধু চিকিৎসাকাজে নয় আমরা গোমূত্রকে স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে প্রচার করতে চাই তিনি আরো বলেন, ‘আমরা একটি পরিকল্পনা করেছি, এবং আমরা তা লক্ষ্নৌ এর আয়ূর্বেদিক বিভাগে পেশ করবো। প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ মিলিলিটার গোমূত্র পান করলে জ্বর, সর্দির মতো মৌসুমি অসুখ এবং পেটের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমাদের লক্ষ্য হলো গোমূত্রকে জনসাধারণের হাতের কাছে নিয়ে আসা
বিভিন্ন গরুর খামার এবং গরু আশ্রয় কেন্দ্র থেকে এউ মূত্র সংগ্রহ করা হবে। এই প্রসঙ্গে সাক্সেনা বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন খামার এবং গরু আশ্রয় কেন্দ্রের সাথে চুক্তি করার কথা ভাবাছ। আমরা শীঘ্রই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেবো।
শুধু পানীয় হিসেবে বিক্রি নয় এই ফার্মেসিটি নিজেদের ঔষধে গোমূত্র ব্যবহার করছে। ভারতে ধর্মীয় কারণে পানীয় ঔষধ হিসেবে গোমূত্র ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়। ……টাইমস অব ইন্ডিয়া “

যেহেতু ভারতের ঐতিহ্যবাহী একটি সংবাদ সংস্থার উদৃতি দিয়ে সংবাদটি প্রকাশ হয়েছে তাই অবিশ্বাসের কোনো কারণ নাই। সংবাদটি পরে আমার মনে হয়েছে ইতোপূর্বেও আমি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জেনেছি ভারতের অনেক নামি দামি রাজনৈতিক নেতা বা প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ীরাও বিভিন্ন রোগের উপশমের জন্য গো-মূত্র পান করতেন। ভারতের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গো-মূত্র পান করতেন কিছু রোগ বালাই উপশমের জন্য।এটি ধর্মীয় কারণেও ভারতীয়দের কাছে একটি রোগ প্রতিষেধক পানীয়। কাজেই ধরে নেয়া যায় গো-মূত্র একটি কার্যকরী রোগ-প্রতিষেধক। তাই ভারতের একটি রাজ্য সরকার এটি বাজারজাত করতে কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

ধর্মীয় কারণে ভারতীয়রা গো-মাংস খেতে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করলেও গো-দুগ্ধ খেতে কোন বিধি নিষেদ নাই। গো-দুগ্ধ থেকে তৈরী দই,মিষ্টি,ছানা- সন্দেশ ,খির ,পায়েস ইত্যাদি সব সুস্বাদু খাবার সকলেই পছন্দ করে। এ সব খাবার গো-দুগ্দ্ধ ছাড়া তৈরী করাও সম্ভব নয়। এ সব খাবার থেকেও শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি বা ক্যালোরি অর্জন করা সম্ভব।

ধর্মীয় বিষয় নিয়ে কথা বলার মত দুঃসাহস আমার নাই। বিশ্বের অনন্যা দেশে গো-মূত্র পানের বিষয়ে আমি এখনও কিছু শুনি নাই। তবে আমার মনে একটা প্রশ্ন উদয় হয়েছে। সেটা হচ্ছে, গো-মূত্র কে খাওয়ার বিষয়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্র এটি কে  বোতলজাত করার প্রস্তাব দিলেও সেদেশের এলোপ্যাথিক বা আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্র এ বিষয়ে কি ভাবছে। এটি কতটা বিশুদ্ধ বা স্বাস্থ্য সম্মত সেসম্পর্কে যে তাদের বক্তব্য কি।

সেইসাথে আরো প্রশ্ন। …. আমরা জানি , মল -মূত্র যেকোন প্রাণীর শরীর থেকে বাড়িয়ে যাওয়া বর্জ্য পদার্থ ,এর মধ্যে কোনো উপকারী স্বাস্থ উপাদান থাকলেও অনেক রোগজীবাণু থাকাও স্বাভাবিক। কাজেই কোন প্রাণীর শরীরের বর্জ্য পদার্থ পান করার আগে সেটি বিশুদ্ধ করার কোন প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে কি। এ বিষয়ে কারো কিছু জানা থাকলে দোয়া করে আমাকে জানাবেন। আর যাইহোক, কোনো প্রাণীর মূল-মূত্র খেয়ে শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক  রাখতে আমার প্রচন্ড আপত্তি আছে।

সংবাদটি পড়ার পর থেকে আমার কাছে মনে হচ্ছে গরু আসলেই একটি উপকারী প্রাণী।স্কুলে লেখা পড়ার সময়ে গরু নিয়ে রচনা লিখতাম। এখনও অনেকে জোক করেন গরু রচনা নিয়ে। তবে গরু যে একটি উপকারী প্রাণী সেটা নিঃসন্দেহে সত্য। তার প্রমান আবার নুতন করে পেলাম সাম্প্রতিক এই  সংবাদ পড়ে। তবে পানীয় হিসাবে গো-মূত্র কতটা নিরাপদ সেবিষয়ে আমার সংশয় এখনও কাটে নাই।

 

১ মন্তব্য

  1. Yes, it’s possible and healthy if it’s recycled properly. US astronauts in International Space Station drink their own recycled urine. Ninety-three percent of all water onboard the ISS is reclaimed from condensate, which, for Nasa astronauts, includes urine. Alamy
    Condensate is the collected breath and sweat of the crew, shower runoff, and urine from animals on board the station. Specifically, 12 mice that came with the Japanese cargo ship, the Kounotori 5 or White Stork.
    Ninety-three percent of all the water on board is reclaimed, according to a video posted by Canadian astronaut Chris Hadfield while he was on the space station in 2013.
    https://www.youtube.com/watch?v=ZQ2T9OJY1lg

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন