টরন্টো থেকে:-

p1

বাংলাদেশে যে সব শীতকালীন শাক সবজি উত্পন্ন হয় তার প্রায় সবই এ দেশে সামারের আবহাওয়ায় উত্পাদন করা সম্ভব। গত কয়েক বছর আমি এ সব শাক সবজি চাষ করে আশানুরূপ ফলন পেয়ে আসছি। টরন্টো সিটির থেকে লিজ নেয়া স্বল্প পরিসর জমিতে আমি এসব চাষাবাদ করে থাকি। আজকের নিবন্ধে  আমার জমিতে গত বসরে উত্পাদিত ফসল সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করছি:-

লাউ এবং লাউ পাতা বাঙালিদের একটি প্রিয় সবজি। টরন্টোতে এটা ভালোই হয়। বাড়ির পিছনের দিকের উঠোনে খুব সহজেই এটা চাষ করা যায়। এতে প্রচুর খনিজ ও ভিটামিন আছে। গবেষণার জানা যায় বাংলাদেশী সবুজ লাউয়ের জাত গুলোতে পরিপোষক অন্য লাউয়ের চেয়ে অনেক বেশি। বর্ণনা করলে পথ্য হিসাবে এর উপকারিতা অনেক। যকৃতের ক্রিয়া স্বচ্ছন্দ রাখতে কাজ করে , চুল পাকা রোধ করে , চুল গজাতে সাহায্য করে , ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে , প্রস্রাব জনিত সকল ব্যাধির নিরাময় করে , আলসার হ্রাস ও রোধ করে , অত্যধিক – অমোঘ ব্যাধি হতে দেয়না , দাঁতের ক্ষয় রোধ করে , ওজন কমানোর মহৌষধ , মানসিক চাপ কমায় , হৃদরোগ প্রতিরোধ করে , শরীর ঠান্ডা ও প্রশান্ত করে , ত্বক মসৃণ করে , অনিদ্রা ও রক্তচাপ থেকে বাঁচায় , পাণ্ডু রোগ আরোগ্য করে ইত্যাদি।

p2

সবজি হিসাবে করল্লার জবাব নাই। পাশের ছবিটি বন্ধু আখতার ভাই এর টরন্টোর ২০১৫ সনের বাগানের। টরন্টোতে করল্লা অসম্ভব রকম ভালো হয়। ভিটামিন , খনিজ এবং আঁশ এর বড় একটা উৎস হলো করল্লা। সবজি জগতে এরকম উপকারী ফসল খুবই কম আছে। এতে পলিপেপটাইড ও কায়্রানটিন থাকায় টাইপ -২ ডায়াবেটিস এর জন্য খুবই কার্যকরী। মা যদি প্রচুর করল্লা খায় তবে এর ফলেট্স নবজাত শিশুকে নার্ভীয় নল অপূর্ণতা থেকে রক্ষা করে। বদহজম, কোষ্ঠবদ্ধতা হতে দেয়না , কোলেস্টেরল কমায়, অগ্ন্যাশয় এর ক্যান্সার রোধ করে , স্বাভাবিকভাবে শরীরে অ্যাসিড কমিয়ে কিডনী পাথর ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে। যকৃত এর রোগে এটা একটা টনিক হিসাবে কাজ করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মার্চ মাসের ২০ তারিখে ঘরে চারা করে মে মাসের ৩য় সপ্তাহে লাগাতে হবে। সরাসরি বীজ বুনে করলেও ভালো হয়। ভালোকথা করল্লার পাতাও সমানভাবে উপকারী।

p3আমার এক বন্ধুর প্রশ্ন ছিল টরন্টোতে কচু গাছ লাগানো যাবে কি না আর এর পাতা খাওয়া যাবে কিনা ? আমার কথা হলো কেন যাবে না ? খুব ভালো ভাবেই লাগানো যাবে। লাগানোর পদ্ধুতি ও খুব সহজ ,আর হয়ও খুবই ভালো।গতবার আমার ছোট্ট সবজি বাগান থেকে অনেক বন্ধুকেই মজার কচুর পাতা বিলিয়েছি।রান্না করা কচুর পাতা খুবই স্বাদ লাগে। আর এতে প্রচুর উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, লৌহ , ভিটামিন -ডি, এ , ই , কে ও আরো অনেক দরকারী খাদ্য উপাদান পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম oxalate, যেটার কারণে গলা চুলকায় টরন্টোতে চাষ করা কচু পাতা রান্নার পরে সেটা থাকেনা।বাড়তি উপকার যেটা পাচ্ছেন তা হলো এন্টি সুপরিণতি এফেক্টস, ক্লান্তি হ্রাস, ওজন লাভ হ্রাস , শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম, ক্ষুদ্রতর কার্ডিয়াক রোগ, কম রক্তচাপ ইত্যাদি।

2 মন্তব্য

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন