কর্মদিবস হোক আর ছুটির দিনই হোক, আমার ঘুম থেকে উঠা হয় অনেক সকালে। আমার সকালের প্রথম ঘন্টাটি মোটামুটি ৩টি ভাগে ভাগ। প্রথমে কিছুক্ষন mindfulness এবং ১৫/২০ মিনিট শরীর চর্চা, তারপর গোসল ও ফজরের নামাজ এবং তৃতীয়টি হলো সকালের খবরের গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম দেখা, এবং এটি TV, রেডিও বা সোশ্যাল মিডিয়া সব মাধমেরই ফিল্টারকৃত কিছু তথ্য।
ঠিক সেই মতে আজ সকালে নামাজের পরে চোখে পড়লো দুটি খবর: একটি বাংলাদেশের, এবং আর একটি কানাডার টরোন্টোর। দুটিই কোরোনার মৃত্যু খবর।
টরোন্টোর বাঙালি কমুনিটির পরিচিত মুখ মুক্তিযোদ্ধা হাজি তুতিউর রহমান সাহেবের মৃত্যু খবরটি পাই এখানকার একটি বাংলা কাগজের সম্পাদক, শ্রদ্ধেয় ভাইয়ের পোস্ট থেকে এবং বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র জালাল সাইফুর রহমানের (পরিচালক, দুদক; ২২তম বিসিএস, ক্যাডার সার্ভিস) মৃত্যু খবর পাই আমার সহপাঠী, বন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যক্ষ এবং বিশিষ্ট গবেষক Ferdous Aman এর পোস্ট থেকে। আমি এর পোস্টগুলি মোটামুটি পড়ি, কারণ তার জানাশোনার পরিধি আমাদের থেকে অনেক অনেক বেশি, তাছাড়া সে অনেক অনেক পড়াশুনা করে এবং ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলে না।
দুটি মৃত্যুই করোনার শিকার । একটি কানাডায়, আর একটি বাংলদেশে।
টরোন্টোর মুক্তিযোদ্ধা হাজি তুতিউর রহমান সাহেবের মৃত্যু খবরটি আমাদেরকে শোকাহত করেছে বটে, এবং তার বিদেহী আত্মার জন্য আমাদের দোয়া থাকবে, তবে তেমন কোনো উত্তরবিহীন প্রশ্ন হয়তো থাকবে না, কারণ ইউটোপিয়া না হলেও এই দেশে একটি জবাবদিহিতামূলক সরকার আছে, তাই দায়িত্বের কোনো অবহেলা করলে সেটির জবাব চাওয়ার ব্যবস্থা আছে, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজ হয়। অন্তত উনি যেই চিৎকিসা পাওয়ার কথা সেই চিকিৎসাই পেয়েছেন। আল্লাহ উনাকে বেহেস্তে নছীব করুন।
 
বন্ধু কোরোনার দুটি মৃত্যু খবর !
আটলান্টিকের এপার আর ওপার, বন্ধুর কিছু প্রশ্ন, আমার আক্ষেপ এবং একটি জবাবদিহিতামূলক প্রশাসনের প্রয়োজনিয়তা !!! ??
 
কর্মদিবস হোক আর ছুটির দিনই হোক, আমার ঘুম থেকে উঠা হয় অনেক সকালে। আমার সকালের প্রথম ঘন্টাটি মোটামুটি ৩টি ভাগে ভাগ। প্রথমে কিছুক্ষন mindfulness এবং ১৫/২০ মিনিট শরীর চর্চা, তারপর গোসল ও ফজরের নামাজ এবং তৃতীয়টি হলো সকালের খবরের গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম দেখা, এবং এটি TV, রেডিও বা সোশ্যাল মিডিয়া সব মাধমেরই ফিল্টারকৃত কিছু তথ্য।
ঠিক সেই মতে আজ সকালে নামাজের পরে চোখে পড়লো দুটি খবর: একটি বাংলাদেশের, এবং আর একটি কানাডার টরোন্টোর। দুটিই কোরোনার মৃত্যু খবর।
টরোন্টোর বাঙালি কমুনিটির পরিচিত মুখ মুক্তিযোদ্ধা হাজি তুতিউর রহমান সাহেবের মৃত্যু খবরটি পাই এখানকার একটি বাংলা কাগজের সম্পাদক, শ্রদ্ধেয় ভাইয়ের পোস্ট থেকে এবং বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র জালাল সাইফুর রহমানের (পরিচালক, দুদক; ২২তম বিসিএস, ক্যাডার সার্ভিস) মৃত্যু খবর পাই আমার সহপাঠী, বন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যক্ষ এবং বিশিষ্ট গবেষক এর পোস্ট থেকে। আমি এর পোস্টগুলি মোটামুটি পড়ি, কারণ তার জানাশোনার পরিধি আমাদের থেকে অনেক অনেক বেশি, তাছাড়া সে অনেক অনেক পড়াশুনা করে এবং ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলে না।
দুটি মৃত্যুই করোনার স্বীকার। একটি কানাডায়, আর একটি বাংলদেশে।
টরোন্টোর মুক্তিযোদ্ধা হাজি তুতিউর রহমান সাহেবের মৃত্যু খবরটি আমাদেরকে শোকাহত করেছে বটে, এবং তার বিদেহী আত্মার জন্য আমাদের দোয়া থাকবে, তবে তেমন কোনো উত্তরবিহীন প্রশ্ন হয়তো থাকবে না, কারণ ইউটোপিয়া না হলেও এই দেশে একটি জবাবদিহিতামূলক সরকার আছে, তাই দায়িত্বের কোনো অবহেলা করলে সেটির জবাব চাওয়ার ব্যবস্থা আছে, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজ হয়। অন্তত উনি যেই চিৎকিসা পাওয়ার কথা সেই চিকিৎসাই পেয়েছেন। আল্লাহ উনাকে বেহেস্তে নছীব করুন।
 
বন্ধু এর প্রশ্নগুলি আমার বা আপনাদের অনেকেরই প্রশ্ন। প্রশ্নগুলি জানতে এই লেখার নিচে তার লেখার কপি থেকে পড়তে পারেন। একজন BCS কর্মকর্তা এবং দুদকের পরিচালক দেশের সাধারণ কোনো মানুষ না। তার মৃত্যুতে যদি অনেক উত্তরহীন প্রশ্নের জন্ম দেয় তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের সাধারণ যে আত্মীয়স্বজন দেশে আছে তাদের অবস্থা কি হবে? অন্তত আমার দেশে থাকা প্রিয়জনদের কোনো মামাখলু বা হোমরাচোমরা কেউ নেই, তাই তাদের কথা চিন্তা করে শংকিত হতে হয়। প্রত্যেকেই মরতে হবে, আজ অথবা কাল, তবে সেই মৃত্যু যদি অবহেলার হয় তাহলেতো আফসোছ থাকবেই। বাংলাদেশের মতো একটি দেশের কাছ থেকে আমরা উন্নত বিশ্বের মতো কোনো সেবা আশা করি না, তবে যেই ব্যবস্থা অলরেডি সেখানে আছে শুধু সেইটুকুরই সঠিক ব্যবহারই আমাদের কাম্য। আর যে ব্যাবস্থাটুকু আছে সেটি পেতে সাধারণ মানুষের কি কাঠখড়ি পড়াতে হয় তা গত ২/৩ বছর আগে গাড়ি একসিডেন্টের পরে আমার ছোট ভগ্নিপতির মৃত্যুপূর্ব চিকিৎসার সময় দেখেছি।
 
আপনাদের অনেকের আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের মতো আমার প্রয়াত বাপও যখন তার সরকারি চাকরি ছেড়ে, আমাদেরকে ফেলে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন নিশ্চয় স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও এই জাতীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা আশা করেননি। আমাদের দেশে কিন্তু একটি ভালো প্রশাসন গড়ে তোয়ালের জন্য যথেষ্ট লোক আছেন, কিন্তু তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। আমি আগেও বলেছি, প্রতি বার দেশে গিয়ে নতুন নতুন অনেক কিছুই দেখি, বড়ো বাড়ি, বড়ো গাড়ি, বড়ো রাস্তা, বড়ো শপিং মল, কিন্তু দেশকর্তাদের অধিকাংশেরই মন এখনো ছোটই রয়ে গেছে, সে কারণে সাধারণ মানুষও যেন সেই পথে চলেছে !
 
আমার এখানকার বর্তমান পেশার একটি মূলমন্ত্র হচ্ছে “HOPE”, আর প্রতিবার দেশে গেলে, দেশের অনেক অনেক মানুষের নড়বড়ে মূল্যবোধ দেখলে সেই “HOPE” এরও নড়বড়ে অবস্থা হয়, তারপরেও হোপফুল থাকতে চাই, হয়তোবা একদিন আসবে সেই দিন ! বড়ো বাড়ি, বড়ো গাড়ি, বড়ো রাস্তা, বড়ো শপিং মল এর পাশাপাশি দেশের কর্তাব্যক্তিসহ সবার মন এবং মূল্যবোধও বড়ো হবে এবং যোগ্য লোকের যোগ্য জায়গায় থাকবেন, তাই নোই কি ! আমার এই আক্ষেপ আমাদের জবাবদিহিতাহীন প্রশাসনের প্রতি, সেই প্রশাসনে যেই দল বা যেই মানুষই থাকুক না কেন তাদের উপরই বেশি দায়িত্ব থাকে প্রশাসনটিকে জবাবদিহিতামূলক করা এবং সাধারণ মানুষকেও সেই শিক্ষা দেওয়া এবং তাদের নিয়ে কাজ করা। একা একা কারোরই কিছু করা সম্ভব নয়।
 
আমি জাস্ট গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে গিয়ে বড়ো বাড়ি, বড়ো গাড়ি, বড়ো রাস্তা, বড়ো শপিং মলের উন্নয়নের পাশে পাশে প্রশাসনের যে ঢিলেঢালা, মূল্যবোধহীন, যত্নহীন এবং খামখেয়ালি অবস্থা দেখেছি সেটি পরবর্তিতে লিখবো। দেশে আমার আত্মীয় এবং অনেক প্রিয়জন থাকেন তাই এতদূরে থাকলেও মাঝে মাঝে মাথা না ঘামিয়ে পারা যায় না। যাহোক, আল্লাহর কাছে লক্ষ শোকর যে এখানকার সংসার, ব্যস্ততম জীবন, চাকরি এবং সরকারকে যথাযথ ট্যাক্স দেওয়ার পরেও আমরা সবাই কমবেশি হলেও দেশের রেমিটেন্সে কিছুটা হলেও অবদান রাখছি। এছাড়া আর কি করা।
সবাই ভালো থাকুন। আল্লাহ সহায় হউন।
মুকুল
টরন্টো
 
Ferdous Aman is feeling heartbroken.
1 hr ·
করোনায় ঢাবি সমাজবিজ্ঞান পরিবারের প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু এবং কয়েকটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন:
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র জালাল সাইফুর রহমান (পরিচালক, দুদক; ২২তম বিসিএস, ক্যাডার সার্ভিস) করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। এ প্রসঙ্গে আমার কয়েকটি প্রশ্ন।
 
প্রশ্ন ১: এই মৃত্যুটি কি ঠেকানো যেতো? উত্তর, হয়তো যেতো। ২৯ তারিখ জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়ে ৫ তারিখই মরে গেলো সবল স্বাস্থ্যের অধিকারী যুবক জালাল? মাত্র ৮ দিনেই? আন্তর্জাতিক গবেষণা ডাটা এগুলো সাপোর্ট করে না।
প্রশ্ন ২: জালাল কি আইসিইউতে ছিলো?
প্রশ্ন ৩: তার কি ভেন্টিলেটর লেগেছিলো?
প্রশ্ন ৪: তার কো ইনফেকশন কি ছিলো? সেটি মোকাবিলায় কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিলো?
প্রশ্ন ৫: সে কি দেরী করে ভর্তি হয়েছিলো? হলে কেন? তার টেস্ট কি দেরিতে হয়েছিলো (আপাত তাই মনে হচ্ছে)? তার টেস্ট কি নিগেটিভ ছিলো? পরে কনফার্মেটরি টেস্ট হয়েছিলো? পরে করলে তো পজিটিভ আসার সম্ভাবনা থাকে (এ ক্ষেত্রে তাই হয়েছিলো মনে হচ্ছে)? তার টেস্ট রিপোর্ট গনমাধ্যমে জানানো হলো না কেন? দুদকের মতো একটা প্রতিষ্ঠানের একজন ক্যাডার কর্মকর্তা, একজন ডিরেক্টরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আমাদের মতো ম্যাঙ্গো পিপলের কি হবে সেটা বুঝতে বাকী রইলো কিছু?
 
জানি এসব প্রশ্নের উত্তর কোনদিন পাবো না। কারণ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মতো সমাজ এটি নয়। এখন বুঝতে পারছেন কেন আমেরিকান, বৃটিশ, অষ্ট্রেলিয়ান, জাপানি, এমনকি মালয়েশিয়ান নাগরিকরা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন? কেন আমেরিকার নাগরিকরা জেনে শুনে বিষ পান করার জন্য নিউ ইয়র্কের মতো একটা জাহান্নমে চলে যাচ্ছে জানেন? কারণ তারা জানে সেখানে করোনায় আক্রান্ত হলেও অন্তত জানতে পারবে সে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, একটা চিকিৎসা অন্তত পাবে। বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। এটাকে বলে ইনফর্মড ডেথ। আর আহাম্মকের দেশে যা হচ্ছে বা হবে সেটা হলো আন-ইনফর্মড ডেথ।
 
চঞ্চলের সাথে আমার পরিচয় সেই নব্বুইয়ের দশকে কলা ভবনের চার তলায় পরীক্ষার কক্ষে। চাপা স্বভাবের মেধাবী এই ছেলেটি আমার স্ত্রীর সহপাঠী। দেখা হলেই বলতো ‘স্যার কবে আসবেন বাসায়?” বলতাম ঐ মিয়া তুমি আমারে স্যার কও ক্যান? আমিতো শুধু তোমাদের পরীক্ষা নিয়েছি, ক্লাসে তো পড়াই নাই। সে বলতো “বাহিরে আপনি আমার স্যার, বাসায় আপনি দুলাভাই।” হায়, চোখের পলকে চঞ্চল চলে গেলো।
 
যে রাষ্ট্রটির জন্য আমরা আমাদের জীবন-যৌবন শেষ করলাম সেই রাষ্ট্রটি ৫০ বছরেও একটু মানবিক হয়ে উঠলো না।
 
(এইমাত্র খবর পেলাম আমাদের আরেক ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী সুমন চাকমা মৃত্যুবরণ করেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ সে ফুসফুস জনিত সমস্যায় ভুগছিলো। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ কোনো হাসপাতাল তার চিকিৎসা করাচ্ছিলোনা। শেষমেশ বিনা চিকিৎসায় সুমন মারা যায়। মৃত্যুর আগে সুমন চাকমার শেষ এবং করুণ ফেইসবুক পোস্টটি দেখুন। এভাবে বিনা চিকিৎসায় কত মানুষ মারা যাবে কে জানে)?
 
কপি পেস্ট করে শেয়ার করতে পারেন
Ferdous Aman এর প্রশ্নগুলি আমার বা আপনাদের অনেকেরই প্রশ্ন। প্রশ্নগুলি জানতে এই লেখার নিচে তার লেখার কপি থেকে পড়তে পারেন। একজন BCS কর্মকর্তা এবং দুদকের পরিচালক দেশের সাধারণ কোনো মানুষ না। তার মৃত্যুতে যদি অনেক উত্তরহীন প্রশ্নের জন্ম দেয় তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের সাধারণ যে আত্মীয়স্বজন দেশে আছে তাদের অবস্থা কি হবে? অন্তত আমার দেশে থাকা প্রিয়জনদের কোনো মামাখলু বা হোমরাচোমরা কেউ নেই, তাই তাদের কথা চিন্তা করে শংকিত হতে হয়। প্রত্যেকেই মরতে হবে, আজ অথবা কাল, তবে সেই মৃত্যু যদি অবহেলার হয় তাহলেতো আফসোছ থাকবেই। বাংলাদেশের মতো একটি দেশের কাছ থেকে আমরা উন্নত বিশ্বের মতো কোনো সেবা আশা করি না, তবে যেই ব্যবস্থা অলরেডি সেখানে আছে শুধু সেইটুকুরই সঠিক ব্যবহারই আমাদের কাম্য। আর যে ব্যাবস্থাটুকু আছে সেটি পেতে সাধারণ মানুষের কি কাঠখড়ি পড়াতে হয় তা গত ২/৩ বছর আগে গাড়ি একসিডেন্টের পরে আমার ছোট ভগ্নিপতির মৃত্যুপূর্ব চিকিৎসার সময় দেখেছি।
 
আপনাদের অনেকের আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের মতো আমার প্রয়াত বাপও যখন তার সরকারি চাকরি ছেড়ে, আমাদেরকে ফেলে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন নিশ্চয় স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও এই জাতীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা আশা করেননি। আমাদের দেশে কিন্তু একটি ভালো প্রশাসন গড়ে তোয়ালের জন্য যথেষ্ট লোক আছেন, কিন্তু তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। আমি আগেও বলেছি, প্রতি বার দেশে গিয়ে নতুন নতুন অনেক কিছুই দেখি, বড়ো বাড়ি, বড়ো গাড়ি, বড়ো রাস্তা, বড়ো শপিং মল, কিন্তু দেশকর্তাদের অধিকাংশেরই মন এখনো ছোটই রয়ে গেছে, সে কারণে সাধারণ মানুষও যেন সেই পথে চলেছে !
 
আমার এখানকার বর্তমান পেশার একটি মূলমন্ত্র হচ্ছে “HOPE”, আর প্রতিবার দেশে গেলে, দেশের অনেক অনেক মানুষের নড়বড়ে মূল্যবোধ দেখলে সেই “HOPE” এরও নড়বড়ে অবস্থা হয়, তারপরেও হোপফুল থাকতে চাই, হয়তোবা একদিন আসবে সেই দিন ! বড়ো বাড়ি, বড়ো গাড়ি, বড়ো রাস্তা, বড়ো শপিং মল এর পাশাপাশি দেশের কর্তাব্যক্তিসহ সবার মন এবং মূল্যবোধও বড়ো হবে এবং যোগ্য লোকের যোগ্য জায়গায় থাকবেন, তাই নোই কি ! আমার এই আক্ষেপ আমাদের জবাবদিহিতাহীন প্রশাসনের প্রতি, সেই প্রশাসনে যেই দল বা যেই মানুষই থাকুক না কেন তাদের উপরই বেশি দায়িত্ব থাকে প্রশাসনটিকে জবাবদিহিতামূলক করা এবং সাধারণ মানুষকেও সেই শিক্ষা দেওয়া এবং তাদের নিয়ে কাজ করা। একা একা কারোরই কিছু করা সম্ভব নয়।
 
আমি জাস্ট গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে গিয়ে বড়ো বাড়ি, বড়ো গাড়ি, বড়ো রাস্তা, বড়ো শপিং মলের উন্নয়নের পাশে পাশে প্রশাসনের যে ঢিলেঢালা, মূল্যবোধহীন, যত্নহীন এবং খামখেয়ালি অবস্থা দেখেছি সেটি পরবর্তিতে লিখবো। দেশে আমার আত্মীয় এবং অনেক প্রিয়জন থাকেন তাই এতদূরে থাকলেও মাঝে মাঝে মাথা না ঘামিয়ে পারা যায় না। যাহোক, আল্লাহর কাছে লক্ষ শোকর যে এখানকার সংসার, ব্যস্ততম জীবন, চাকরি এবং সরকারকে যথাযথ ট্যাক্স দেওয়ার পরেও আমরা সবাই কমবেশি হলেও দেশের রেমিটেন্সে কিছুটা হলেও অবদান রাখছি। এছাড়া আর কি করা।
সবাই ভালো থাকুন। আল্লাহ সহায় হউন।
মুকুল
টরন্টো
 
Ferdous Aman is feeling heartbroken.
1 hr ·
করোনায় ঢাবি সমাজবিজ্ঞান পরিবারের প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু এবং কয়েকটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন:
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র জালাল সাইফুর রহমান (পরিচালক, দুদক; ২২তম বিসিএস, ক্যাডার সার্ভিস) করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। এ প্রসঙ্গে আমার কয়েকটি প্রশ্ন।
 
প্রশ্ন ১: এই মৃত্যুটি কি ঠেকানো যেতো? উত্তর, হয়তো যেতো। ২৯ তারিখ জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়ে ৫ তারিখই মরে গেলো সবল স্বাস্থ্যের অধিকারী যুবক জালাল? মাত্র ৮ দিনেই? আন্তর্জাতিক গবেষণা ডাটা এগুলো সাপোর্ট করে না।
প্রশ্ন ২: জালাল কি আইসিইউতে ছিলো?
প্রশ্ন ৩: তার কি ভেন্টিলেটর লেগেছিলো?
প্রশ্ন ৪: তার কো ইনফেকশন কি ছিলো? সেটি মোকাবিলায় কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিলো?
প্রশ্ন ৫: সে কি দেরী করে ভর্তি হয়েছিলো? হলে কেন? তার টেস্ট কি দেরিতে হয়েছিলো (আপাত তাই মনে হচ্ছে)? তার টেস্ট কি নিগেটিভ ছিলো? পরে কনফার্মেটরি টেস্ট হয়েছিলো? পরে করলে তো পজিটিভ আসার সম্ভাবনা থাকে (এ ক্ষেত্রে তাই হয়েছিলো মনে হচ্ছে)? তার টেস্ট রিপোর্ট গনমাধ্যমে জানানো হলো না কেন? দুদকের মতো একটা প্রতিষ্ঠানের একজন ক্যাডার কর্মকর্তা, একজন ডিরেক্টরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আমাদের মতো ম্যাঙ্গো পিপলের কি হবে সেটা বুঝতে বাকী রইলো কিছু?
 
জানি এসব প্রশ্নের উত্তর কোনদিন পাবো না। কারণ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মতো সমাজ এটি নয়। এখন বুঝতে পারছেন কেন আমেরিকান, বৃটিশ, অষ্ট্রেলিয়ান, জাপানি, এমনকি মালয়েশিয়ান নাগরিকরা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন? কেন আমেরিকার নাগরিকরা জেনে শুনে বিষ পান করার জন্য নিউ ইয়র্কের মতো একটা জাহান্নমে চলে যাচ্ছে জানেন? কারণ তারা জানে সেখানে করোনায় আক্রান্ত হলেও অন্তত জানতে পারবে সে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, একটা চিকিৎসা অন্তত পাবে। বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। এটাকে বলে ইনফর্মড ডেথ। আর আহাম্মকের দেশে যা হচ্ছে বা হবে সেটা হলো আন-ইনফর্মড ডেথ।
 
চঞ্চলের সাথে আমার পরিচয় সেই নব্বুইয়ের দশকে কলা ভবনের চার তলায় পরীক্ষার কক্ষে। চাপা স্বভাবের মেধাবী এই ছেলেটি আমার স্ত্রীর সহপাঠী। দেখা হলেই বলতো ‘স্যার কবে আসবেন বাসায়?” বলতাম ঐ মিয়া তুমি আমারে স্যার কও ক্যান? আমিতো শুধু তোমাদের পরীক্ষা নিয়েছি, ক্লাসে তো পড়াই নাই। সে বলতো “বাহিরে আপনি আমার স্যার, বাসায় আপনি দুলাভাই।” হায়, চোখের পলকে চঞ্চল চলে গেলো।
 
যে রাষ্ট্রটির জন্য আমরা আমাদের জীবন-যৌবন শেষ করলাম সেই রাষ্ট্রটি ৫০ বছরেও একটু মানবিক হয়ে উঠলো না।
 
(এইমাত্র খবর পেলাম আমাদের আরেক ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী সুমন চাকমা মৃত্যুবরণ করেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ সে ফুসফুস জনিত সমস্যায় ভুগছিলো। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ কোনো হাসপাতাল তার চিকিৎসা করাচ্ছিলোনা। শেষমেশ বিনা চিকিৎসায় সুমন মারা যায়। মৃত্যুর আগে সুমন চাকমার শেষ এবং করুণ ফেইসবুক পোস্টটি দেখুন। এভাবে বিনা চিকিৎসায় কত মানুষ মারা যাবে কে জানে)?
 
কপি পেস্ট করে শেয়ার করতে পারেন
Ferdous Aman

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন