নিচের DBC নিউস এর বাংলা খবরের ক্লিপটি অপার সৌজন্যে। তার পোস্ট থেকেই নেওয়া। এখানে দেখানো হয়েছে দেশে FB পরিচয়ের মাধ্যমে বিয়ে করে বা বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে কেউ কেউ লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন, অথচ আমার নিজেরই বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয় স্বজন যারা অত্তান্ত মেধাবী এবং শত তারা কোনোমতে জীবন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা কি আসলে এই প্রতারকদের থেকে বেশি মেধাবী !

আপনারা হয়তো আমার FB কভার পেজে দেখবেন লেখা আছে আপনার যথাযত পরিচয় ছাড়া ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালে সেটা গ্রহণ করা হবে না। সে আপনি যেই হন না কেন। কারণ আমপানর একটি FB আছে, শুধু মাত্র সেইটাই আপনার পরিচয় নয়। তাছাড়া, FBএ দেওয়া সমস্ত তথ্য যে কোরান/বাইবেলের সত্য তা নয়। ভালো করে না জেনে, না চিনে শুধু মাত্র FBএর আকর্ষণীয় কিছু তথ্য আর ছবির উপর ভিত্তি করে আপনি জীবনের বিরাট একটা সিদ্ধান্ত নিলে আপনাকে বোকা বা বোকার হদ্দ বলা ছাড়া আর কি বলবো। এটা শুধু বিয়ের ক্ষেত্রে নয়, বিদেশ গমন, চাকরি বাকরি ইত্যাদি যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার কি ভালো করে খোঁজ খবর নেওয়া উচিত না। আপনি এই scrutinazetion নিজের থেকে যতদিন না করতে পারবেন, ততদিন আইন বলেন আর মিলিটারি/পুলিশ বলেন খুব বেশি কিছু করতে পারবে না। আর এই ধান্দাবাজগুলিও কি creative, মানুষ ঠকানোর এতো বুদ্ধি, শুধু যদি ভালো কাজে খাটাতো।

আর একটি বিষয় এখানে লক্ষণীয়। ওই বেক্তির সাথে তার বোনসহ আরো অনেকে জড়িত। এখানে দেখেন আমরা পারিবারিকভাবে কিভাবে আমাদের নিজেদের লোককে আকামে সহায়তা করছি। তার এই বোনটি কিন্তু একবার ভাবছে না সে অন্য একজন মেয়ের সর্বনাশ করতে সাহায্য করছে। এমনিতেই তো ওই সমাজে নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত, তার উপর যদি একজন নারীই নারীর ক্ষতি করে তাহলে যতই নারী আন্দোলন করেন খুব বেশি দূর আগানো যাবে না।
আপনারা সাম্প্রতিক হলিউডের এক মোগল হার্ভি ওয়াইনসিটন এর কথা জানেন। যার কারণে পৃথিবীতে “me to” মুভমেন্ট এর সৃষ্টি হয়েছে এবং তার মতো পয়সাওয়ালা এবং ক্ষমতাধারী লোককে জেলে যেতে হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস এর যে দুই মহিলা সাংবাদিক Meghan T এবং Jodi K তার কুকর্মর কথা ফাঁস করে যে দুঃসাহসিক কাজ করেছেন তার জন্যে তারা সংবাদিক জগতের অন্যতম স্বীকৃতি পেয়েছেন। (2018 Pulitzer Prize for Public Service).

এই দুই সাংবাদিকের লেখা সম্প্রতিক She Said: Breaking the Sexual Harassment Story বইটি পড়লে জানতে পারবেন এই কাজ করতে গিয়ে তাদের কত বাধা বিপত্তি এবং হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এবং এই বাধা বিপত্তি শুধু মাত্র পুরুষদের থেকে আসেনি, এসেছে অনেক নারীদের থেকেও। এই জাতীয় পুরুষসগুলি খুব কৌশলে তাদের নাম ধাম এবং অর্থের মাধ্যমে কিছু নারীদের দিয়ে তাদের চার পাশে একটি শাক্তিশালী নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে রাখেন, যেই বলয় কিনা তাদের কুকর্মকে রক্ষা করে চলে, আর ভিক্টিমগুলি প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হয় এবং মুখ বন্ধ করে রাখে।

এই বইটিতে দেখবেন কিভাবে ওয়াইনস্টিন এর শক্তিশালী মহিলা উকিল বিভিন্নভাবে ওয়াইনস্টিন এর ভিক্টিম মহিলাদের মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছেন। এবং এই উকিল ওই দুই সাংবাদিককেও বিভিন্নভাবে বশ করার চেষ্টা করেছেন।
এখন কথা হলো, যে কোনো ধরণের নির্যাতন, প্রতারণা, অন্যায় রোধ করতে হলে শুধু মাত্র আইন, শুধুমাত্র একটি মাত্র গোষ্ঠী অথবা ভিক্টিম একা কিছু করতে পারবে না। নিজেকে প্রথম সচেতন হতে হবে। আমার ভাই কোনো এক মেয়ের প্রতি নির্যাতন করছে কিন্তু সে আমার ভাই, তাই তার অন্যায়টা অন্যায় না এই মেন্টালিটি থাকলে এগুলি চলতেই থাকবে।
অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন যেন আমাদের দেশে প্রথাগত এবং গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে। আমারই পরিচিত এক যুবক, অত্তান্ত মেধাবী এবং সৎ সে এক জায়গায় বিয়ে করতে গেলো। চাকরি/বাকরি ছিল, মোটামুটি ভালই তার জীবন কিন্তু গাড়ি বাড়ি ছিল না। তাই একটি মেয়ের পরিবার তার সাথে মেয়ে বিয়ে দিলো না। পরে খবর নিয়ে দেখলাম তাদের মেয়েকে যার সাথে বিয়ে দিয়েছেন সেই ছেলের বেতন আর আমার পরিচিতজনের বেতন এক, কিন্তু এই ছেলের বাড়ি গাড়ি আছে। অথচ এই ছেলের বাপের জমানো টাকা ছিল না, বা বাপ্ তেমন বিরাট কিছু করেন না। কিন্তু কোই, মেয়ের বাবা বা মা বা তাদের পরিবারের কেউইতো প্রশ্ন করলেন না ওই সীমিত বেতনে কিভাবে সে বাড়ি গাড়ি করলো। বরং অনেক ক্ষেত্রে এইভাবে উপরি ইনকাম থাকাকে আমরা যোগ্যতা হিসাবে দেখি।
সৎভাবে মোটামুটি চলার থেকে উনারা দুই নাম্বারি করে মেয়েকে রাণীর হালে রাখতে চান। এভাবেই স্বীকৃত পায় দুই নাম্বারি।

যাহোক, FB ব্যবহার করে মানুষের বোকামির সুযোগ নিয়ে মানুষ কিভাবে সহজে লক্ষ লক্ষ টাকা কামাচ্ছে।
এক অর্থে আমরা কমাতে দিস্ছি। আসেন সবাই একটু সচেতন হই এবং এদেরকে আর এই লাগামহীন ভাবে কামানো বন্ধ করি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মুকুল

https://www.facebook.com/watch/?v=432052371019232

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন