মানডাল , নরওয়ে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সারা পৃথিবী জুড়ে বাংলাদেশিরা জীবিকার সন্ধানে কিংবা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে সারা পৃথিবিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছেন, তারই সূত্র ধরে বাংলাদেশীরা আবাস গড়েছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে, পরিবার গড়ার তাগিদে বিয়ে করেছেন ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া, কিংবা আফ্রিকা মহাদেশের ভিনদেশিদের সাথে,
এবং বৎসরের পর বৎসর সংসার করছেন নানান সুখ দুঃখকে সঙ্গী করে। যেহেতু বাংলাদেশিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এবং সংসার করছেন ভিনদেশিদের সাথে তাই পৃথিবির নানান প্রান্ত জুড়ে আধা বাংলাদেশী ছেলে মেয়েতে ভরপুর। সারা ইউরোপ জুড়ে অনেক আধা বাংলাদেশি ছেলে মেয়ে আছে যাদের বাবা কিংবা মা বাংলাদেশী , আর গত কয়েক দশক ধরে যেহেতু ইউরোপ মহাদেশে বাংলাদেশিদের আনাগুনা একটু বেশি তাই ইউরোপ জুড়ে আধা বাংলাদেশী ছেলে মেয়েদের হারও একটু বেশি। 
লন্ডনে পড়ালেখা করা অবস্থায় অনেক বাংলাদেশিকেই চিনতাম যাদের স্ত্রী কিংবা স্বামী হয়তোবা ব্রিটিশ নয়তোবা ইউরোপের অন্য কোনো দেশের নাগরিক। এখনো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী অনেক বন্ধুদের সাথে পরিচয় আছে তাদের বেশির ভাগের স্বামী কিংবা স্ত্রী হয় পোলিশ, নয়তোবা ফ্রেঞ্চ নয়তোবা লাটভিয়ান, লিথুনিয়ান , নতুবা সুইডিশ নয়তোবা নরওয়েজিয়ান অথবা রুমানিয়ান।


ছবিতে যাদের দেখছে তাদের ছাড়াও নরওয়েতে অনেক অনেক বাংলাদেশী আছেন কিংবা আগে ছিলেন যাদের স্ত্রী কিংবা স্বামী ইউরোপিয়ান যেকোনো এক দেশের নাগরিক এবং আমাদের মতো করে উনাদেরও আধা বাংলাদেশী অনেকগুলো ছেলেমেয়ে এখানে নরওয়েতে আছে।


ছবির সবাই নরওয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী হলেও আমাদের স্ত্রীরা সবাই কিন্তু নরওয়েজিয়ান নয় তবে আমাদের সবারই ছেলে কিংবা মেয়ে আধা বাংলাদেশী আধা ইউরোপিয়ান । 
এইসকল আধা বাংলাদেশী ছেলে মেয়েদের জন্য তাদের বাবা মায়ের ভালোবাসার কোনো শেষ নেই। হাজার পরিশ্রম, হাজার ত্যাগের বিনিময়ে এবং জীবনের সবকিছু দিয়ে হলেও তাদের বাবা মা চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে ছেলে মেয়েরা মানুষের মতো মানুষ হয় আর দেশ বিদেশে বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করে। 


আমরা যাদের ছেলে মেয়েরা আধা বাংলাদেশী তাদের একটাই স্বপ্ন , আমাদের ছেলে মেয়েরা যেন তাদের ব্যক্তি জীবনে আমাদের মতো কষ্টের সম্মুখীন না হয় এবং ঠিক মতো পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়, বাবামায়ের মুখ উজ্জ্বল করে এবং একটু বাংলায় কথা বলা শেখে, বাংলাদেশ সম্পর্কে একটু আগ্রহী হয় এবং বড় হলে একবার করে হলেও বাংলাদেশে গিয়ে বাপ্ দাদার ভিটে মাটি ঘুরে দেখে আসে। (চলবে-)

 

 

 

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন