7

ইউক্রেন থেকে:-

 -মনু রিকশাওয়ালা এবং রিকশা আর্ট-

বেশ সৌখিন লোক ছিলো মনু রিকশাওয়ালা। প্রতি শুক্রবার রাতে বাবরী চুলে সুগন্ধী তেল মেখে টায়ারের ‘অক্ষয়কুমার’ স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে নাইট শোতে সিনেমা দেখতে যেতো। মাসে দু’বার কুমিল্লায় ফায়ার ব্রিগেডের পুকুরের পাড়ে রিকশা ধুতে এলে আমরা চোখের পলকে জড়ো হয়ে যেতাম সেখানে। সেই কবেকার কথা,সবেমাত্র ইস্কুলে যাওয়া শুরু করেছি তখন।

9

রিকশার সমুখে লাগানো দুটো চকচকে পিতলের ফুলদানী, গ্রীপের ঝালর, হ্যান্ডেলের ওপর তোতা পাখি আর হুডের ওপর বসানো তাজমহল এবং অদ্ভূত “রিকশা আর্ট” আমাদের বিস্ময়কর জগতে নিয়ে যেতো। বিভিন্ন রকমের ফুল-ফল, জীবজন্তু, ফিল্মের নায়ক-নায়িকা, সখিনার প্রেম, গরীবের দুঃখ, নানারকম প্রবাদ-বাক্য, মিস্ত্রী আর শিল্পীর নাম – এতো তথ্যের ধাক্কায় গুলিয়ে যেত আমাদের ছোট্টো মাথা এবং মাসে কমপক্ষে দু’রাত ঘুম হতো না ঠিকমতো। রিকশা তো নয়, যেন পক্ষীরাজ! মনুর সাথে পরিচয় আছে বলে বেশ গর্ব হতো সেসময়।

4

জানিয়ে রাখি, বাংলাদেশের “রিকশা আর্ট” দেশের বাইরে এখন খুব জনপ্রিয়, সংগ্রাহকরা বেশ ভালো দামে কেনে, এবং স্টক ইমেজ সাইটগুলোতে হাজার হাজার ছবি পড়ে আছে।

10

মনে আছে, এর অনেক বছর পর অন্য এক রিকশার পেছনে আঁকা বেশ মজার একটা মজার ছবি দেখেছিলাম। ফুলের বাগানে দাঁড়িয়ে এক পালোয়ান দু’হাত দিয়ে দুই হেলিকপ্টার টেনে নামাচ্ছে, আর তার দু’পায়ের ভেতর দিয়ে রেলগাড়ী চলে যাচ্ছে…! নীচে লেখা “ফুটিল মালতী ফুল ভরিল বাগান, যারে আমি ভালোবাসি, করব তারে দান”। কি অদ্ভূত শিল্পকর্ম,…তবে ওই ছবির সাথে লেখাটার কি সম্পর্ক ছিলো, এখনো ভেবে পাইনা!

8

 

p12

ইন্টারনেটের বদৌলতে এতকাল পরেও রিকশা আর্টের পুরো ইতিহাস খুটিনাটি উপাদান সহ অদ্যোপান্ত খুঁজে পেয়েছি (ছবিতে দেখা যাবে), তবে ওই পালোয়ানের ছবিটা পাওয়া গেল না বলে খানিকটা দুঃখ থেকে গেল!

5

 

p11

2 মন্তব্য

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন