জন্ম হয়েছিলো নবগঙ্গার পাড়ে, তারপর কতো নদী পার হয়ে থিতু হয়েছিলাম বুড়িগঙ্গার তীরে। চাকরি অতঃপর ব্যবসা মিলিয়ে তাও কেটেছিল আঠারোটা বছর। জীবনে সফলতা বলতে কি বুঝায় তা আমি শত চেষ্টা করেও বুঝিতে পারিনি। প্রথম যেদিন গুলিস্তান এলাকায় চাকরিতে যোগ দিতে গেলাম, দেখলাম অফিস বিল্ডিং কাছেই ডাস্টবিনের পাশে একপা কাটা মধ্য বয়সী একজন ভিক্ষুক শুয়ে পড়ে ভিক্ষা করছে। আটারো বছর গুলিস্তান এলাকায় আমি চাকরি ও ব্যবসা করেছি, সেও ঐ একই জায়গায় ভিক্ষা করেছে, এখনও করে। তবে কি আমরা দুজনেই কি পেশাগত ভাবে সফল ছিলাম? হ্যাঁ ছিলাম, না থাকলে এতোটা বছর আমরা একই জায়গায় থাকতাম না। অন্য কোথাও রোজগার খুঁজতাম। আমি সফল চাকুরীজীবী ও ব্যবসায়ী, সে সফল ভিক্ষুক।
সেও মানুষ, আমিও মানুষ,পার্থক্য শুধু পেশাগত।
এই পার্থক্যের দেয়ালে ভাগ ভাগ হয়ে হয়ে আমরা কেউ আর মানুষ থাকিনা। পেশা,ধর্ম, দলে আর বিশেষণে পরিচিতি পেয়ে যাই। কেউ আর কাউকে মানুষ মনে করে না, মানুষ বলে ডাকেও না।
……. অতঃপর জীবনের ভাঙা গড়ার খেলায় বুড়িগঙ্গার তীর থেকে পশ্চিমের ডেট্রয়েট নদীর পাড়ে বসে জীবনের টালিখাতা খুলে বসি। বার বার কষি, হিসাব মেলে না।
…কোথা থেকে যেন শক্তি চট্টোপাধ্যায় এসে হাজির হন, মুচকি হেসে বলেন,,,,:
“আসলে তুমি ক্ষুদ্র ছোট,
ফুলের মত বাগানে ফোটো,
—–
আসলে কেউ বড় হয়না,বড়র মত দেখায়”।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন