দিদিমার মুখ ঝামটা,,, কি রে ধাঙড় অবেলায় ঘুমুচ্ছিস্ যে বড় ? কাজে যাস্ নি ?* না গো সই শরীরটা ভালো না জ্বর জ্বর ।আহারে কানাই আমার ! * তা তুমি রাই , মর্ত্যে নেমেছো কেন ?
জ্বালা রে বড্ড জ্বালা ।মরেও তো শান্তি নেই। * বেশ তো আছো স্বর্গে , দাদু কি এখনো যন্ত্রণা দেয় ? সে আর বলতে ! ওপারে গিয়ে আরো বেশি বাড় বেড়েছে, ফেসবুক না কি কয় ! তাই খুলেছে, খালি রিকু দেয়, তাও আবার বেছে বেছে, তুই কি বুঝোস্ আমি কি কই ? ও পাড়ার শ্যামলীকে তোর মনে আছে ? আরে ঐ যে , আমি মর্ত্যে থাকতে তক্কে তক্কে থেকে সামাল দিয়েছি । সেই মুখপুড়ি এখন তোর দাদুর ফ্রেন্ড লিস্টে, মা গো মা !! ম্যাসেজ এর কি ভাষা ! মনে হয় স্বর্গের লিচু গাছের ডালে ফাঁস দিয়ে আর একবার মরি । কিন্তু পোড়া কপাল আমার, স্বর্গে গাছ আছে , দড়ি নেই।পুকুর আছে নদী আছে ,কলসী নেই ।মরণ আর মরা হয় না !! * ফেসবুক খুলে কি করবে তুমি ? তোর দাদুর সবগুলো বন্ধুকে রিকু দেবো । ওগো,হ্যাঁগো,কৃষ্ণগো ,এসব বলে বলে ম্যাসেজ দেবো । ইটের বদলে পাটকেল, ম্যাসেজ এর বদলে রাধা ম্যাসেজ, সটে সটাং । * হা হা হা, আচ্ছা দিদিমা তোমাকে ফেসবুক খুলে দেবো । তুমি ইচ্ছে মতো ম্যাসেজ দিও , যখন খুশি যাকে । তবে তোমরা নাতবৌকেও মাঝে মাঝে ম্যাসেজ দিয়ে খোঁজ খবর নিও ।তবেই হয়েছে!! আরে ও অভাগী তো স্বর্গেই নেই। *তবে কি নরকবাস ? ওরে নারে না, অমন কথা মুখেও আনিস্ না,পাপ হবে, ঘোরতর পাপ।ঐ রকম সোনার মানুষকে নরকে পাঠাতে সৃষ্টিকর্তারও বুক কাঁপবে যে । *তবে যে বললে সে স্বর্গে নেই ? ওরে ও অভাগা, শোন তাহলে , ঐ অভাগিনী স্বর্গই পেয়েছিলো , তবে সে ঢুকেনি , গো ধরে স্বর্গের সিঁড়িতে বসে আছে ।মর্ত্যে থাকতে যে রকম জিদ আর রাগ ছিলো,তেমনই আছে, একবার না বলেছে তো, হ্যাঁ করায় কে ? দেবতারা কত বোঝালেন, দেবীরা হাত ধরে টানাটানি করলেন , সব ব্যর্থ ।অভাগীর এককথা, তোকে ছাড়া সে স্বর্গে ঢুকবে না, যতদিন লাগে লাগুক , তুই গেলে একসাথে স্বর্গের ভেতরে যাবে ।তোর দাদু আর আমি এ সব দেখি আর কপাল চাপড়াই । সৃষ্টিকর্তারও বিচার বটে !! অমোন সোনার সংসারের সোনার প্রতিমা, এভাবে অসময়ে কেউ তুলে আনে ? আমি যাই রে দাদুভাই । * ফেসবুক খুলবে না ? না রে , তোর দাদু বললো,তাই তোকে দেখতে এলাম ।* তবে যে বললে? ধুর বোকা !! দুষ্টুমি করলাম, সবাই সবকিছু পারে না, প্রয়োজন থাকলেও পারে না। তুইও পারিস্ না , আর পারিস্ না বলেই , অভাগী স্বর্গের সিঁড়িতে অপেক্ষা করে ,,,,,,,,,,
ঘুমটা ভেঙে গেল রাধাকান্তের, সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমেছে।ঘরটা আবছায়া অন্ধকার, জ্বর বেড়েছে ,শীতে কাঁপতে কাঁপতে কেমন জানি ঘোরের মধ্যে হারালো নিজেকে।প্রলাপের মতো বিড় বিড় করে আউড়াতে লাগলো,,,,,,
অরবিন্দ গুহের কবিতা,,,
—————
রাশি -রাশি বৃন্তহীন জবায় সমস্ত রাস্তা ঢাকা,
পদ্মের পাপড়ির মধ্যে ডুবে আছে ভ্রমরের প্রমা;
ধূপধুনো তো তুমি জ্বালিয়েছ,
তোমারই চোখের জলে ধুনোর আগুন
বরংবার নিভে যায়, বরংবার জ্বলে ।

আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
এখানে আপনার নাম লিখুন